রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩১

ডায়াবেটিক রোগীদের চোখের চিকিৎসায় নতুন আবিষ্কার

জীবন যাপন নভেম্বর ২৭, ২০২২, ০৬:৫৩ পিএম
ডায়াবেটিক রোগীদের চোখের চিকিৎসায় নতুন আবিষ্কার

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায় ৩৩ শতাংশেরই চোখের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে অনেক রোগীর দৃষ্টিশক্তি কমে আসে এবং এক পর্যায়ে স্থায়ী অন্ধত্বের দিকে অগ্রসর হয়। এই রোগের চিকিৎসা দেশে সীমিত পর্যায়ে চালু থাকলেও সহজলভ্য নয়। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসায় স্থায়ী অন্ধত্ব এড়ানো সম্ভব। সুইস বায়োটেক প্রতিষ্ঠান রোশের সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ নতুন আবিষ্কার এই রোগের রোগীদের চিকিৎসাসেবাকে সহজ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি এবং রোশ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রবিবার (২৭ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।

সভায় বলা হয়, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ায় ডায়াবেটিক ম্যাকুলার ইডিমা (ডিএমই) রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এছাড়া বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (এএমডি) রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এর ফলে রোগী, পরিবার ও সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।  

সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভ্ল্যান্ড ক্লিনিক ফ্লোরিডার স্ট্যাফ ফিজিসিয়ান অধ্যাপক ডা. রিশি পল সিং। তিনি ডিএমই এবং এএমডি আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি, নতুন আবিষ্কৃত ওষুধ ও বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ আই হসপিটালের কনসাল্ট্যান্ট ভিট্রিও রেটিনা সার্জন ডা. নিয়াজ আবদুর রহমান বাংলাদেশে ডিএমই এবং এএমডি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে বক্তব্য দেন।

ডা. নিয়াজ আবদুর রহমান বলেন ‘আমাদের কাছে আসা রোগীদের মধ্যে ডিএমই এবং এএমডি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই রোগীদের স্থায়ী অন্ধত্ব থেকে রক্ষা করা সম্ভব। তবে এর চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে হলে সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে, বিশেষ করে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন।’

সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন এই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার প্রথম এবং একমাত্র ওষুধ যা এনজিওপয়েটিন-২ এবং ভিইজিএফ-এ উভয়ের হিসেবে কাজ করবে। এনজিপয়েটিন-২ এবং ভিইজিএফ-এ চোখের রেটিনার রক্তনালী সংক্রান্ত রোগের অন্যতম প্রধান অনুঘটক। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল থেকে জানা যায়, চোখের এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ওষুধের ডোজের অন্তবর্তীকালীন সময় চার মাস পর্যন্ত উন্নীত করা সম্ভব। এর ফলে রোগীদের হাসপাতালে যাতায়াত এবং আনুসাঙ্গিক খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা সম্ভব। রোগীর জীবনে গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। এছাড়াও এর ফলে হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে, যা চিকিৎসকদের অধিক রোগীকে সেবাদানের সুযোগ বৃদ্ধি করবে।

বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি এবং অফথামোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের মহাসচিব ডা. তারিক রেজা আলী স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশে ডিএমই আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন।

সমাপনী বক্তব্যে রোশ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আফরোজ জলিল বলেন ‘বাংলাদেশে অন্ধত্বের হার কমাতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অবদান অনস্বীকার্য। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে, তাই ডিএমই’র ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিরোধ এবং যথাযথ স্ক্রিনিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।’

Side banner