রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩১
ব্যক্তি মাত্রই সৌন্দর্যের পূজারি। আর এই সৌন্দর্য প্রকাশিত হয় সুন্দর মুখ অবয়ব ও সুন্দর দাঁতের মাধ্যমে। সুন্দর চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে আঁকা-বাঁকা, ফাঁকা ও উঁচু-নিচু দাঁতের কারণে। একথা সত্য যে, এ সমস্যাতে দেশের অসংখ্য মানুষ ভুগছেন। অথচ অধিকাংশ মানুষ এই সমস্যার কারণ ও প্রতিকার সম্বন্ধে তেমন কিছু জানেন না।
সামাজিকভাবে ভালো অবস্থান তৈরিতে আপনাকে হতে হচ্ছে হেয় প্রতিপন্ন। প্রাণ খোলা হাসি অনেকটাই মুছে যাচ্ছে আপনার জীবন থেকে। কারণ দাঁতের সমস্যা। অথচ একটু সচেতন হলেই এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন সহজেই। ফলে সুস্থ, সুন্দর দাঁত যেমন আপনার ব্যক্তিত্বকে করবে উজ্জ্বল তেমন আপনাকে দেবে প্রানবন্তভাব। তাই এখনিই সময় সচেতন হওয়ার ও সচেতন করার।
আঁকা-বাঁকা, ফাঁকা ও উঁচু-নিচু দাঁত কেন হয়:
* নির্দিষ্ট বয়সের আগে দুধের দাঁত ফেলে দিলে
* দীর্ঘদিন পর্যন্ত দুধ দাঁত থেকে গেলে
* অতিরিক্ত কোনো দাঁত থাকলে, কোন দাঁত কম থাকলে
* দাঁতের আকার চোয়ালের তুলনায় বড় বা ছোট হলে
* বংশগত কারণে
* বাচ্চাদের আঙুল চোষার অভ্যাস থাকলে
* নাকের পরিবর্তে মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে
* দাঁত ও তার চারপাশের পেশির (জিহবা, গাল, ঠোঁট) মধ্যে ভারসাম্য না থাকলে
* দাঁতের ওপর ঠোঁটের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে বা বেশি নিয়ন্ত্রিত হলে
* মুখের মধ্যে কোনো টিউমার বা সিস্ট থাকলে
* আঘাতজনিত কারণে
* সিস্টেমিক ও লোকাল অসুখের কারণে।
আঁকা-বাঁকা দাঁত থাকলে সাধারণত যে ধরনের অসুবিধা হয়:
* মুখের সৌন্দর্য কমে যায়
* খাবার চিবাতে অসুবিধা হয়
* মানসিক সমস্যা দেখা দেয়
* মাড়ির প্রদাহ দেখা দেয়
* দাঁতে ক্যারিজ হতে পারে
* দাঁতে বেশি বেশি পাক জমে
* কথা বলতে অসুবিধা হয়।
আঁকা-বাঁকা, ফাঁকা ও উঁচু-নিচু দাঁত প্রতিরোধে করণীয়:
* বাচ্চাদের বোতলে দুধ খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে
* বাচ্চা ও তার বাবা-মা কে ভালভাবে ব্রাস করার পদ্ধতি শেখাতে হবে
* নিয়মিত ডেন্টিস্ট এর পরামর্শ নিতে হবে, দুধ দাঁতের যত্ন নিতে হবে
* দুধ দাঁতে প্রক্সিমাল ক্যারিজ (দুই দাঁতের মধ্যে) হলে তার চিকিৎসা করতে হবে
* কোনো অতিরিক্ত দাঁত থাকলে তা যথাযথ সময়ে ফেলে দিতে হবে
* নির্দিষ্ট বয়সের আগে দুধ দাঁত ফেলে দিলে স্পেস মেন্তেনার লাগিয়ে স্পেস ধরে রাখতে হবে
* ওপরের দাঁত নিচের দাঁতের সঙ্গে আটকে গেলে দাঁতের কাস্পের।
অগ্রভাগ কেটে দিতে হবে কোন অস্বাভাবিক অভ্যাস যেমন
আঙুল চোষার অভ্যাস থাকলে তা বন্ধ করতে হবে কাউন্সিলিং বা আপিয়ান্সের সাহায্যে ফ্রেনাম ও জিহ্বার কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে সার্জারি করে তা স্বাভাবিক করতে হবে।
নিয়মিত দুধ দাঁতের পরিচর্যা আর আঁকা-বাঁকা দাঁতের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিলে আপনি আপনার দাঁত আর মুখশ্রী সহজেই আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।
লেখক: দন্ত চিকিৎসক রকিবুল ইসলাম বাবু