শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে ব্রাজিল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। দেশটির মোট আয়তন ৮৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৭৭ বর্গকিলোমিটার (৫২ লাখ ৯০ হাজার ৮৯৯ বর্গমাইল)। জনসংখ্যা ২০ কোটির বেশি। দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র ও বিশ্বের সর্ববৃহৎ পর্তুগিজভাষী রাষ্ট্র এটি।
মুসলমানের সংখ্যা
ব্রাজিলে ২০ কোটি লোকসংখ্যার বেশির ভাগই ক্যাথলিক খ্রিস্টান। তবে অন্য ধর্মাবলম্বীর পাশাপাশি বেশ কিছু মুসলমানও রয়েছে। যার সংখ্যা ৩৫ লাখের মতো। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫-৬ শতাংশ। এই গাণিতিক হিসাবে লাতিনের সর্ববৃহৎ এই দেশটিতে ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা কম মনে হলেও আনন্দের সংবাদ হচ্ছে, ব্রাজিলে মুসলমানের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সাওপাওলোতেই মাসে গড়ে ছয়জন মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে। (সূত্র : ‘আল-মুসলিমুনা ফিল ব্রাজিল, ড. খালিদ রিজক তকিউদ্দিন)
ব্রাজিলে ইসলামের আগমন
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ব্রাজিলে ইসলামের আগমন আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কারের সূচনালগ্ন থেকেই। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের ২২ এপ্রিল বিখ্যাত পর্তুগিজ পরিব্রাজক ও আবিষ্কারক পেড্রো আলভারেস কারব্যাল (Pedro Álvares Carbal) [১৪৬৭-১৫২০] যখন ব্রাজিল উপকূলে জাহাজ নোঙর করেন, তখন তাঁর সঙ্গে বেশ কিছু স্বনামধন্য, দক্ষ, কর্মঠ ও পারদর্শী মুসলিম নাবিক ছিলেন। তন্মধ্যে শিহাবুদ্দিন বিন মাজেদ ও মুসা বিন সাতি অন্যতম। ইতিহাসের বরাত অনুযায়ী তাঁদের হাত ধরেই ব্রাজিলে ইসলাম ও মুসলমানের আগমন ঘটে। (আল-ইসলাম ওয়াল মুসলিমুন ফিল ব্রাজিল, আল-মুজতামা অনলাইন সংস্করণ-২০১)
তবে বিখ্যাত ব্রাজিলিয়ান ইতিহাসবিদ জোয়াকিন হেপিরো (Joaquin Hepiro) ব্রাজিলে ইসলামের আগমনের ব্যাপারে ১৯৫৮ সালে একটি লেকচার দেন এবং পরবর্তী সময়ে ব্রাজিলের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় লেকচারটি প্রকাশ করা হয়। তাতে তিনি অত্যন্ত তাগিদের সঙ্গে উল্লেখ করেন, ‘১৫০০ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগিজদের ব্রাজিল আবিষ্কারের অনেক আগে আরব বণিক ও নাবিকরা ব্রাজিল আবিষ্কার করেন। পর্তুগিজরা মূলত জাহাজ চালনা ও নির্মাণশিল্পে দক্ষ এবং বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মুসলিম নাবিকদের সহযোগিতায় ব্রাজিলে আগমন করে। ’ (সূত্র : http://www.alukah.net/world_muslims/0/4306/)
অন্যদিকে যখন স্পেনে মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন হয়, তখন বিপুলসংখ্যক স্প্যানিশ মুসলমান খ্রিস্টানদের নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে পালিয়ে ব্রাজিলে হিজরত (আশ্রয় গ্রহণ) করে। ক্রমান্বয়ে ব্রাজিলে স্প্যানিশ মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে স্পেনের অনুকরণে ব্রাজিলের তৎকালীন পর্তুগিজ সরকার ব্রাজিলেও ‘অনুসন্ধান-আদালত’ প্রতিষ্ঠা করে এবং অনৈতিক ও মানবিক বিচারের আওতায় এনে বহুসংখ্যক মুসলমানকে জ্বলন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। মুসলমানদের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন নিদর্শন মুছে ফেলে। (সূত্র : ইসলামওয়েবের বরাতে ‘তারিখুল মুসলিমিন ফি ব্রাজিল’)
ব্রাজিলের জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে জানা যায়, ব্রাজিলে যেসব আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মুসলিম রয়েছে, তাদের পর্তুগিজরা দাস হিসেবে ব্রাজিলে নিয়ে আসে। তারা পুরোপুরি মুসলিম ছিল এবং আরবি উচ্চারণে কোরআন তিলাওয়াত করতেন।
ব্রাজিলে কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিমদের প্রথম বহর আসে ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে এবং ৪০ বছর পেরোনোর আগেই ১৪ হাজারের বেশি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মুসলমান আফ্রিকা থেকে ব্রাজিলে স্থানান্তরিত হয়। পর্তুগিজরা পরবর্তী সময়ে কয়েক বছরে নিগ্রো মুসলিমদের বেশি হারে নিয়ে আসতে শুরু করে। এমনকি শুধু অ্যাঙ্গোলা থেকেই ছয় লাখ ৪২ হাজার নিগ্রো মুসলিমকে ব্রাজিলে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া সুদানের বিভিন্ন অঞ্চল ও পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিমদের ব্রাজিলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসব নিগ্রো মুসলমানকে জোরপূর্বক ব্রাজিলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের হাত-পা শিকলে বেঁধে জাহাজের পাটাতনে ফেলে নিয়ে যাওয়া হতো। নির্যাতন-অবহেলা, অনাহারে ও রোগাক্রান্ত হয়ে যেসব মুসলমান মারা যেত, তাদের মাঝপথে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হতো। (সূত্র : ব্রাজিল জা-রাহাল মুসলিমুনা ওয়াকতাশাফুহা কাবলাল বুর্তুগালিয়িন)
কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানদের অবদান
বিখ্যাত ঐতিহাসিক গিলবার্টো ফেরেইরি (Gilberto Freyre) [১৫ মার্চ ১৯০০-১৮ জুলাই ১৯৮৭] তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘এ নিউ ওয়ার্ল্ড ইন দ্য ট্রপিক্যাল সফেরেসে’ (A new world in the Tropical Spheres) উল্লেখ করেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানরা ব্রাজিলের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সক্রিয়তা ও সৃজনশীলতার অন্যতম উপাদান হিসেবে নিজেদের পরিচয়ই দেয়নি; বরং আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, সে সময় ব্রাজিলে যারা এসেছিল, তাদের মধ্যে এই কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানরাই সর্বাধিক চারিত্রিক মাধুর্যের অধিকারী ছিল। যদিও তাদের দাস হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানদের প্রতি ব্রাজিল সব সময় ঋণী হয়ে থাকবে। আখ-চিনি, কফি, তুলা, বিভিন্ন ধরনের শস্যদানা, এমনকি প্রয়োজনীয় সব ধরনের কৃষি সরঞ্জামাদি তাঁরা আফ্রিকা থেকে ব্রাজিলে নিয়ে এসেছিল।
তৎকালীন আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানদের প্রযুক্তিগত ও কারিগরি জ্ঞান ব্রাজিলিয়ান ও স্বয়ং পর্তুগিজদের চেয়ে উন্নত ছিল। ব্রাজিলের সভ্যতা ও সমাজ গঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এসব কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানের গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম। মজার কথা হলো, দাস মুসলমানরা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি তাদের মূর্খ মালিকদের লিখিত বিভিন্ন কাজকর্মেও আঞ্জাম দিত। এমনকি তাদের অজ্ঞ মালিকরা পর্তুগিজদের সঙ্গে কথা বলত মুসলমান দাসদের দোভাষী বানিয়ে। এ ছাড়া নিজের মূর্খ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুর কাছে চিঠি লিখত মুসলমান দাসদের মাধ্যমে এবং সে চিঠিও মূর্খ প্রাপককে পড়ে শোনাতো অন্য মুসলমান দাসরা। ’ (সূত্র : http://www.alraimedia.com/Home/Details?Id)
মুসলমানদের অস্তিত্বের লড়াই
মুসলিম দাসদের মধ্যে যারা অন্যদের তুলনায় বয়স্ক ও শিক্ষিত ছিল, তারা অন্যদের ওয়াজ-নসিহত করত এবং কোরআন, ফিকহ, আকিদা ও শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি শিক্ষা দিত। তাদের সঙ্গে বসবাসের অযোগ্য কুটিরগুলোতে থাকত।
যখন ক্রমান্বয়ে মুসলমান দাসের সংখ্যা ও শক্তিমত্তা বৃদ্ধি পেল, তখন তারা বিভিন্ন ইসলামী স্বাধীনতা বিপ্লব সংঘটিত করে। বিপ্লবগুলোর অন্যতম ছিল ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলীয় আলমিরস শহরে মুসলমান দাস বিদ্রোহীদের জড়ো হওয়া।
প্রাপ্ত ইতিহাসের মাধ্যমে জানা যায়, সেখানে প্রায় ৩০ হাজার কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমান বিদ্রোহে শরিক হয়েছিল এবং তরুণ মুসলিম নেতা জানজা জুম্বার নেতৃত্বে নিপীড়িতদের জন্য একটি আলাদা মুসলিম রাজ্য গঠন করে। দীর্ঘদিন ধরে তারা তাদের রাজ্য জানজা জুম্বার ভাই ও পুত্রদের মাধ্যমে টিকিয়ে রেখেছিল। বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র মোতাবেক বলা হয়ে থাকে, জুম্বা ছিলেন পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকারী কঙ্গোর রাজার নাতি। যদিও কঙ্গোর রাজা পর্তুগিজদের বিপক্ষে সফল হতে পারেননি।
দীর্ঘ সংঘর্ষের পরও যখন মুসলমানদের দমন করা যায়নি, তখন পর্তুগিজরা জুম্বার সঙ্গে সন্ধি করতে চায়। কিন্তু জুম্বি নামের আরেকজন অল্প বয়সী মুসলিম নেতা পর্তুগিজদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের আঁচ পেয়ে সন্ধি মানতে নারাজ হন এবং তিনি আমরণ লড়াই চালিয়ে যান। ফলে ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বীর জুম্বি পর্তুগিজদের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ পরিচালনা করেন। ফলে অনেক চেষ্টার পরও পর্তুগিজরা মুসলমানদের বিদ্রোহ দমন বা কোণঠাসা করতে পারেনি।
শেষ পর্যন্ত পর্তুগিজরা রাজধানী সাওপাওলো থেকে বিপুল পরিমাণ সামরিক শক্তির সাহায্য নেওয়ার পর ১৬৯৪ খ্রিস্টাব্দে আলমিরস মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন হয়। (সূত্র : http://howiyapress.com)
পর্তুগিজরা কঠোর হস্তে মুসলিম বিদ্রোহীদের দমন করে। ফলে কয়েক মাসের মধ্যেই মুসলমানরা পরাজিত হয়। মুসলিম বিদ্রোহীদের লাশগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশে ও ‘সানসালাত সেলে’ পড়ে পচতে থাকে।
বিদ্রোহ দমনের পর অনেক মুসলমানকে জোরপূর্বক খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়। ধর্মান্তরিত হতে রাজি না হওয়ায় অনেককে হত্যা করা হয়। ফলে কিছু মুসলমানের কাছে ব্রাজিলীয় পৌত্তলিকতা আসতে শুরু করে। এমনকি ব্রাজিলের মুসলমানরা এখনো বিভিন্ন পৌত্তলিকতাপূর্ণ অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করে থাকে। (সূত্র : ‘আল-মুসলিমুনা ফিল ব্রাজিল : বাইনাল মাদি ওয়াল হাদির’)
ইংল্যান্ডের চাপে পড়ে ১৮৮৮ সালে ব্রাজিলে দাসপ্রথা বিলুপ্ত করা হয় এবং ব্রাজিলই সর্বশেষ দেশ, যারা দাসপ্রথা বিলুপ্ত করে। কিন্তু এই দাসপ্রথা বিলুপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার মুসলমানকে হত্যা করা হয়। ধ্বংস করা হয় অনেক মসজিদ। অনেক মুসলমান খ্রিস্টানদের সঙ্গে মিশে নিজেদের ধর্মবিশ্বাস ও ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে। তাদের মুসলিম পরিচয়টা পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল না।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে এলসালভাদর ও বাহিয়ার বেশ কিছু গির্জার দেয়ালেও কোরআনের বিভিন্ন আয়াতের নকশা অলংকৃত হচ্ছে। গির্জার ব্যবস্থাপকরা আরবি না জানার কারণে এগুলো কী তা উদ্ঘাটন ও নির্ণয় করতে পারেনি। বস্তুত অনেক গির্জা আগে মসজিদ ছিল এবং খ্রিস্টানরা মুসলমানদের হত্যা ও দমন করে মসজিদগুলোকে গির্জায় রূপান্তরিত করে। (http://www.alukah.net/world_muslims/0/4306/)
ব্রাজিলের মুসলমানদের বর্তমান অবস্থা
ব্রাজিলের মুসলমানদের জন্য সুদিন আসতে শুরু করে ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে। লেবানন, ফিলিস্তিন, মিসর ও সিরিয়া থেকে মুসলমানরা ব্রাজিল আসতে থাকে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ও লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় এবং ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রাজিল সম্রাট মিসর, লেবানন ও সিরিয়া সফর করার পর থেকে। রাজা দ্বিতীয় পেড্রোর সঙ্গে চুক্তি হয় লেবাননের। লেবানিজরা ব্যবসা করার জন্য আসতে শুরু করে দেশটিতে।
দ্বিতীয় মাত্রায় ১৮১৪ ও তৃতীয় মাত্রায় ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে বিপুলসংখ্যক মুসলমান ব্রাজিলে হিজরত করে। গত শতাব্দীতে ও বর্তমানে ব্রাজিলে হিজরতকারী বেশির ভাগ মুসলমান ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। ব্রাজিলের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে মুসলিম ব্যবসায়ীরা। তবে অন্যান্য পেশার সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম—চাকরি, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও খেলাধুলায়ও মুসলমানরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। অন্যদিকে আরব বসন্তের পর গত কয়েক বছরে চার শতাধিক সিরিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে শতাধিক মুসলিম পরিবার ব্রাজিলে আশ্রয় নিয়েছে।
ব্রাজিলে মসজিদ-মাদরাসা
বর্তমানে ব্রাজিলের প্রতিটি শহরেই মসজিদ আছে। ব্রাজিলে মসজিদের সংখ্যা প্রায় ১৩০টি। ২০০০ সালের তুলনায় মসজিদের সংখ্যা এখন চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের ইসলামী জ্ঞান শিক্ষা দেওয়ার জন্য রয়েছে মক্তব-মাদরাসা ও ইসলামিক স্কুল। সরকার থেকেও নিয়মিত পাচ্ছে সহযোগিতা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা। রিও ডি জেনেইরোয় রয়েছে বৃহৎ ইসলামিক সেন্টার, ইসলামিক স্কুল, বেশ কয়েকটি বড় মসজিদ। সাওপাওলোতেও রয়েছে বিশাল মুসলিম কমিউনিটি।
ব্রাজিলের সাওপাওলো, রিও ডি জেনেইরো ও রিগ্রেন্ডে দে সোল তুলনামূলক মুসলিম অধ্যুষিত শহর। এ ছাড়া পারানা শহরে রয়েছে আরব বংশোদ্ভূত উল্লেখযোগ্য মুসলিম সম্প্রদায়। (সূত্র :http://articles.islamweb.net/media/article&lang57952)
দাওয়াত ও তাবলিগের ফলে ব্রাজিলের পরিবেশ এখন ভিন্ন রকম। মুসলমানরাও ধর্মকর্মে আগের তুলনায় অনেকটা প্রাগ্রসর। প্রতি শনিবার ব্রাজিলের বিভিন্ন মসজিদে স্থানীয়দের নিয়ে ইসলামবিষয়ক ক্লাস করানো হয়। পঞ্চাশটির মতো ইসলামী সংস্থা মুসলমানদের পাশাপাশি অমুসলিমদেরও নিরন্তরভাবে দাওয়াত, শিক্ষা ও সহযোগিতা করে আসছে।
ইসলাম সম্পর্কে তাঁদের আগ্রহ ও ঔত্সুক্য ব্যাপক। সাওপাওলোর মসজিদগুলোতে দেখা যায়, প্রতিদিনই ব্রাজিলিয়ান খ্রিস্টান নারীরা ইসলাম সম্পর্কে জানতে আসেন। ব্রাজিলের মাটিকে ইসলাম প্রচারের উর্বর ভূমি মনে করছেন স্থানীয় মুসলমানরা।
বিশিষ্ট দার্শনিক ও বিচারপতি মুফতি তকি উসমানি বলেন, ব্রাজিলে ১০ জনকে ইসলামের দাওয়াত দিলে আটজনই দাওয়াত গ্রহণ করেন। ’ বেশি হারে দাওয়াতের কাজ চালু থাকলেও বিশ্বের অন্য কিছু অমুসলিম দেশের মতো বিভিন্ন অসুবিধা সেখানে আছে। তবে আশা করা যায়, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ব্রাজিল একসময় মুসলিমপ্রধান দেশ হয়ে উঠতে বেশি দেরি হবে না।
সূত্র: ঢাকাপোস্ট