রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩১

একটি পোস্টমর্টেমের গল্প ও শিক্ষা

জীবন যাপন ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ০৭:২৬ পিএম
একটি পোস্টমর্টেমের গল্প ও শিক্ষা

মানুষ যদি কখনও অটোপসি (পোস্টমর্টেম) কিভাবে করা হয় তা দেখতো তাহলে কখনই হয়তো সুইসাইডের কথা চিন্তাও করতো না।

আজকে দ্বিতীয়বার অটোপসি দেখার সুযোগ হয়। অনেক এক্সাইমেন্ট নিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনটা লাশ (কেস) ছিলো তখন।

একজন ২৩ বছর বয়সি মেয়ের ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যার কেস। আরেকজন ৩০ বছর বয়সি মহিলার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার কেস। এবং আরেকজন ৩০-৩২ বছর বয়সি পুরুষকে দা দিয়ে কুপিয়ে মার্ডার কেস।

প্রথমেই ডোম মামা গায়ের সব জামা কাপর কেটে খুলে ফেলে ২৩ বছর বয়সি মেয়েটার।আহা...আজ সেই পর্দা, লজ্জা, সম্ভ্রম সবই যেন অসহায়। তারপরেই গলা থেকে নাভির নিচ পর্যন্ত একটানে দুইভাগ করে দেয়।হয়তো আমরা কুরবানির সময়ও গরুকে অনেক কেয়ার করে কাটি। বাট এখানে দুইপাশে টেনে চামড়া ছিলে ফেল্লো। পাজরের কার্টিলেজ টা নাইফের একটানে কেটে ভেতরের সব অর্গান দেখা হলো। পেটে বাচ্চা ছিলো কিনা চেক করলো।

মাথার পেছনে একটা ইনসিশন দিয়ে নারিকেলের ছোবড়া ছোলার মত টেনে মাথার চামড়া টা কপাল পর্যন্ত ছোলে খুলিটা কুপিয়ে ভাঙ্গছিলো। কেমন যেনো গরুর হাড্ডি কুপানোর কথা মনে পরে যাচ্ছিলো।

এমন ভাবেই পয়সনিং এর মহিলাটারও এভাবেই কেটে স্টমাক, লিভার, কিডনি, ব্রেন বের করে ফেরিনসিক এর জন্য পাঠিয়ে দিলো।

মার্ডার কেসটা তো চোখের দেখাতেই মার্ডার কেস। তাও কাটাকাটি করতেই হলো। সব শেষে আবার বস্তা সেলাইয়ের এর মত নিচ থেকে উপরে সেলাই করে লাশ খালাস। বাথরুমে নাকি আরেকটা নতুন লাশ আসছে। সেটাকে আনতে চলে গেলো মামারা।

কোথায় গেলো এত সম্ভ্রম এত দাম্ভিকতা? 
বার বার একটা কথাই মনে হচ্ছিলো...মরে গেলে শরীরটার যেন আর একপয়সার ও দাম নেই। বেঁচে থাকতে হয়তো ওই দুইটা মহিলার দিকে কেউ তাকানোর সাহস ও পেত না। বাট এখন মরার পরে নিথর দেহ পরে আছে। বিবস্র অবস্থায় লাশ ঘরে ধারালো ছুরি আর করাতের ধারে মাথার খুলি আলাদা হওয়ার অপেক্ষায়।

আত্মহত্যার পরে তার শরীরটার সাথে কি করা হয় যদি কেউ কখনও দেখতো তাহলে হয়তো দেশে আত্মহত্যার পরিমান অনেকটা কমে যেতো।

অবশ্য মানুষের বডির মূল্য আর কত?! মারা গেলে পশুরাও খায় না। এখন মনে হচ্ছে আখেরাতটাই আসল। এই দুনিয়ায় আমরা শুধু ব্যাটারি লাগানো একটা শরীর।

আত্মা ছাড়া শরীরের কোনো দাম নাই। আর বাপ-দাদার টাকা না থাকলে ডেড বডিটারও কোনো সম্মান নাই।

সম্পাদনায়: উজ্জল প্রধান

Side banner